সন্ধ্যার পর ছাদে

"এ্যাই! সন্ধ্যার পর আব্বু-আম্মু বাসায় থাকবেনা। কল দিলেই তুমি ছাদে চলে এসো হু?" 
- ছাদে কেন? রুমে আসলে কি সমস্যা!
"আরে আমার সাথে কাজের মেয়েটাও থাকবে তো। ওকে ঘরে রেখে আমি ছাদে আসবো। বুঝেছো?"
- হু, বুঝেছি।
শীত খুব একটা নেই আজ। তবু সন্ধ্যার পর সূচীকে একান্তে পাবে ভাবতেই হিমেলের সারা শরীর শিহরিত হয়ে ওঠে। 
বিকেল থেকে ঘড়ির কাটাটা মনে হচ্ছে এক জায়গাতেই থেমে আছে। ধুর! সময়টা আজ এত মন্থর কেন! হিমেল অধৈর্য্য হয়ে যায়। বাসা থেকে বেরিয়ে গলির মোড়ে গিয়ে পায়চারী করে, টং দোকানে চা খেতে খেতে ভাবে- অনেকদিন অপেক্ষা করেছে। আজ সূচীকে চুমু খাবে। জীবনের প্রথম চুমু!
অবশেষে সন্ধ্যা নামে। হিমেল আর নিজেকে সামলাতে পারেনা, সূচীকে কল দিয়ে বসে।
- আসবো?
"দশ মিনিট পরে আসো প্লিজ। আব্বু-আম্মু একটু পরে বের হবে"।
সূচীদের বাসাটা তিনতলা। এক তলাতে অফিস। দোতলাতে ভাড়াটিয়া, তিন তলাতে ওরা থাকে। বারিধারার এ এলাকাটা সন্ধ্যার পর মোটামুটি নির্জন হয়ে যায়। হিমেল সরাসরি ছাদে চলে গেলো। সূচীর জন্য অপেক্ষা!
ছাদে কোনো আলো নেই। আশেপাশের বাসা গুলো মূলত অফিস হিসাবে ব্যবহৃত হয়। ওগুলো থেকে কিছুটা আলো এসে পড়েছে ছাদের এক কোনায়, অদ্ভুত এক আলো-আঁধারি পরিবেশ।
সূচী এলো। ছাদে উঠেই ওকে ইতি-উতি করে এদিক ওদিক খুজছে। হিমেল চিলেকোঠার আধারে দাঁড়িয়ে থাকায় দেখতে পাচ্ছেনা। হিমেলের মাথায় দুষ্টুমি খেলে গেলো। ও পেছন থেকে সূচিকে জড়িয়ে ধরে, তারপর কিছু বুঝে ওঠার আগেই হ্যাচকা টানে নিজের দিকে ঘুরিয়ে টুপ করে ঠোটে চুমু খায়। সূচী ভয় পাওয়া হরিণীর মত নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে দৌড়ে নিচে পালায়।
কিছুক্ষণ পর সূচী আবার ফিরে আসে। হিমেলের মুখে দুষ্টুমির হাসি।
"ওভাবে ছুটে পালালে কেন! লজ্জা পেয়েছিলে?"
- কই পালালাম! আমি তো মাত্রই এলাম। কাজের মেয়েটাকে দেখতে পাঠিয়েছিলাম তুমি এসেছো কিনা! কেন, কি হয়েছে?
হিমেল কিছু না বলে প্রাণপণে হাতের তালুতে ঠোট মুছতে থাকে! 

Comments

Popular posts from this blog

দ্বিধা !

সমাজ !

দৌড়া বাজান দৌড়া টাকার পিছে lyrics